জবাবদিহিতা নেই বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে

 প্রতিবেদক

জবাবদিহিতা নেই বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গ্যাসের দাম বাড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

আজ মঙ্গলবার মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির নবগঠিত আহবায়ক কমিটির নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এই সরকারের জবাবদিহিতা থাকলে ১২ কেজি গ্যাস সিলিন্ডারে ১৯ টাকা বাড়িয়েছে- এটা তো হতে পারে না। যারা সীমিত আয়ের মানুষ। নিম্ন আয়ের মানুষ। সিএনজি, রিক্সা চালক, যারা দিনমজুরি করে খায় তাদের ওপর ভয়ংকর চাপ পড়বে। এই যে প্রতি সিলিন্ডারে ১৯ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে এটা অযৌক্তিক। এটা গণবিরোধী। নির্বাচিত সরকার থাকলে এ ধরনের পরিস্থিতি হবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক দল অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাপোর্ট দেই। কিন্তু আপনাদের (সরকারকে) মনে রাখতে হবে আপনাদের সিদ্ধান্ত যেন গণবিরোধী না হয়। গরিব মানুষ মারার সিদ্ধান্ত যেন না হয়। এমনিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে। চালের দাম কমাতে পারেননি। তার মধ্যে যদি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয় তাহলে মরার উপর খড়ার ঘা ছাড়া কিছুই নয়।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশের জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিল। সেই ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দেশে কে সরকার গঠন করবে তা নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। কিন্তু শেখ হাসিনা সেটা করতে দেয়নি। ছাত্র জনতার রক্তঝরা গণ আন্দোলনে সেই ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গিয়েছে এবং দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য জনগণদের আশা জাগানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনেক কিছু করার আছে। দেশের জনগণ গত ১৬-১৭ বছর ধরে ভোট কেন্দ্রে যেতে পারে নাই। ভোট দিতে পারে নাই। দেশের জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে ভোট দিতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেই পরিবেশটা তৈরি করবেন এটাই জনগণের চাওয়া।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সংস্কারের নামে জনগণের চোখে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করা যাবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে আপনারা সংস্কার করলে করুন কিন্তু সংস্কারের নামে গণতন্ত্রকে মজবুত শক্তিশালী করার জন্য যে কাজগুলো রয়েছে সেগুলো করেন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে গণতন্ত্র মানে হচ্ছে জনগণের শক্তি জনগণের ক্ষমতা। সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। তার জন্যে নির্বাচনের তারিখ ঠিক করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। কে সংগঠন তৈরি করবে।? কে দল তৈরি করবে? সেই দায়িত্ব হচ্ছে সেই ব্যক্তির। এই দায়িত্ব প্রধান উপদেষ্টার নয়। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ব্যবস্থা আপনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) করতে হবে। তা না হলে জনগণের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি হবে যে শেখ হাসিনার কোন প্রেতাত্মা আবার জন্ম নেয় কিনা। একটা সংশয় দেখা দিবে।’

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সরকার নাই বলে আজ ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছে না। বিনিয়োগ করতে কেউ সাহস পাচ্ছে না। কারণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হচ্ছে সাময়িক সময়ের সরকার। সুতরাং মানুষ অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। মানুষ একটা ধোয়াশার মধ্যে আছে। এই অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্যই রাজনৈতিক সরকার দরকার।’

এসময় তার সঙ্গে আরও ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক আফরোজা খান রিতা, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, অর্থ বিষয়ক সহ-সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির এস এ জিন্নাহ কবিরসহ নেতাকর্মীরা।