আসছে সেই চলচ্চিত্র, যা শুধু বিনোদন নয়—এক হৃদয়ভাঙা বাস্তবতার দলিল। তরী মাল্টিমিডিয়ার ব্যানারে নির্মিত এবং বিপ্লব হায়দারের পরিচালনায় বহু প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘আলী’ মুক্তি পাচ্ছে আগামী ১৮ জুলাই। এটি একটি ভাই-বোনের নিবিড় সম্পর্ক, সমাজের নীরব নির্মমতা এবং এক মধ্যবিত্ত পরিবারের আত্মসংগ্রামের হৃদয়স্পর্শী কাহিনি। চলচ্চিত্রটির কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘আলী’-তে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ, যিনি এক বাকপ্রতিবন্ধী তরুণের ভূমিকায় নিজের সত্তাকে ভেঙে ভিন্নধর্মী এক অভিজ্ঞতা উপহার দিয়েছেন। তার ছোট বোন ‘রোশনি’র ভূমিকায় দেখা যাবে নবাগত অর্পাকে। দু’জনেই অসাধারণ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের আবেগ ছুঁয়ে যাবেন বলে প্রত্যাশা। তবে ‘আলী’ চলচ্চিত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী ও হৃদয়বিদারক চরিত্র নিঃসন্দেহে ‘মামা সাজু’, যেখানে অভিনয় করেছেন শওকত সজল। গার্মেন্টস কর্মী মামা সাজু তার ভাগ্নে-ভাগ্নিকে গ্রামের নিঃস্বতা থেকে শহরের স্বপ্নে নিয়ে আসেন, এক সুন্দর ভবিষ্যতের আশায়। কিন্তু নেমে আসে নির্মম দুর্যোগ—ধর্ষণ, খুন এবং একের পর এক করুণ বিপর্যয় এই গল্পকে শুধু পারিবারিক ট্র্যাজেডিতে সীমাবদ্ধ রাখে না, বরং সমাজের গভীর অসঙ্গতিগুলোর মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়।
অভিনেতা শওকত সজল জানান,“মামা সাজু চরিত্রটি আমার জীবনের সবচেয়ে আবেগপ্রবণ অভিনয়। এখানে অনেক স্তর—ভালোবাসা, কষ্ট, রাগ, প্রতিবাদ—সবকিছু চুপ থেকে বুঝিয়ে দিতে হয়েছে। এই চরিত্রে কাজ করতে পারা আমার জীবনের অন্যতম গর্বের অধ্যায়।”পরিচালক বিপ্লব হায়দার বলেন,“‘আলী’ সিনেমাটি বাস্তবতার এক আয়না। এটি কেবল গল্প নয়, সমাজের প্রতি এক মর্মস্পর্শী বার্তা।”প্রযোজক তাজুল ইসলাম জানান,“আজকের বাংলাদেশে অনেক ‘আলী’ ও ‘মামা সাজু’ আছেন—নিঃশব্দে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। আমরা সেই নীরব কান্না ও শক্তিকে পর্দায় তুলে ধরতে চেয়েছি।”
চলচ্চিত্রটির অন্যান্য চরিত্রে আছেন মিশা সওদাগর, শতাব্দী ওয়াদুদ, কাজী হায়াৎ, সাইফুল, ইকবাল, সুমন, তন্ময় ও নমিরা সহ একঝাঁক তারকা শিল্পী। শুটিং হয়েছে বান্দরবানের পাহাড়ি লোকেশন ও ঢাকার বাস্তব প্রেক্ষাপটে, যা দর্শকদের এক অনন্য ভিজ্যুয়াল অভিজ্ঞতা এনে দেবে। ‘আলী’ শুধু একটি সিনেমা নয়, এটি সমাজের উপেক্ষিত গল্পগুলোর একটি বাস্তব দলিল, যা দর্শক হৃদয়ে গভীর প্রভাব ফেলবে বলেই আশা করা হচ্ছে।