যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনায় মার্কিন হামলার প্রতিশোধ না নেয়ার বিরুদ্ধে ইরানকে সতর্ক করে দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শনিবার বলেছেন, পাল্টা হামলা চালালে দেশকে নজিরবিহীন ‘ট্র্যাজেডির’ মুখোমুখি হতে হবে।
ট্রাম্প বলেন, ফোর্ডো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পরমাণু স্থাপনায় তিনি যে ‘ব্যাপক নির্ভুল হামলা’ চালানোর অনুমোদন দিয়েছেন তা ‘একটি দর্শনীয় সামরিক সাফল্য’।
মধ্যপ্রাচ্যের বলদাগার দেশ ইরানকে এখন শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যদি তারা তা না করে তবে ভবিষ্যতে হামলা আরও বড় এবং অনেক সহজ হবে,” তিনি জাতীয়ভাবে টেলিভিশনে প্রচারিত মন্তব্যে বলেছিলেন।
“এটা চলতে পারে না। হয় শান্তি আসবে অথবা ইরানের জন্য বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটবে, যা গত আট দিনে আমরা যা প্রত্যক্ষ করেছি তার চেয়ে অনেক বেশি। মনে রাখতে হবে, এখনও অনেক টার্গেট বাকি। আজকের রাতটি ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন, এখন পর্যন্ত, এবং সম্ভবত সবচেয়ে প্রাণঘাতী। তবে দ্রুত শান্তি না এলে আমরা নিখুঁততা, গতি ও দক্ষতার সঙ্গে অন্য লক্ষ্যগুলো অনুসরণ করব।
ট্রাম্প বলেন, অবশিষ্ট লক্ষ্যবস্তুগুলোর বেশিরভাগই ‘কয়েক মিনিটের মধ্যে’ মুছে ফেলা যাবে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এবং জয়েন্ট চিফস চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন রোববার সকালে বক্তব্য দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ফোরদো পরমাণু স্থাপনা কোমের কাছে ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থান, যা ইরানের গভীরতম এবং সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনা যা প্রচলিত বিমান হামলা প্রতিরোধের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরান বলেছিল, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তা ‘অপূরণীয় পরিণতি’ ডেকে আনবে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি সামরিকভাবে এই সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে তাহলে অবশ্যই তাদের যে ক্ষতি হবে তা অপূরণীয় হবে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, হামলার পর ওই অঞ্চলে অবস্থানরত প্রত্যেক মার্কিন নাগরিক ও সামরিক কর্মী এখন বৈধ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ট্রাম্প বারবার তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন এবং বলেছেন যে আমেরিকা ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করতে দেবে না, যা ইরান বারবার অস্বীকার করেছে।
১৩ জুন ইসরায়েল সামরিক ও পরমাণু স্থাপনাসহ ইরানের বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলা চালালে তেহরান পাল্টা হামলা চালায়।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এরপর থেকে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ২৫ জন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলায় ইরানে ৪৩০ জন নিহত ও সাড়ে তিন হাজারের বেশি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
