রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী হত্যা: ছাত্রদল নেতা রবিনের দায় স্বীকার ঢাকা জেলা পুলিশ লাইন্স (মিল ব্যারাক) ও আরআরএফ, ঢাকা পরিদর্শন”করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্বাচনের ভাগ নয়, চাই দেশ পুনর্গঠন: নাহিদ ইসলাম এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ককপিটে যা হয়েছিল ইরানের সঙ্গে যুদ্ধে ৫০০ ইসরাইলি নিহত: গালিবাফ সাবেক আইজিপি মামুনের ক্ষমার বিষয়টি বিবেচনা করবে ট্রাইব্যুনাল ছেলের পরকীয়া ঠেকাতে ‘মায়ের কাণ্ড’ সরকার কোনোভাবেই ‘মব জাস্টিস’ বরদাশত করে না: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পুতুলকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে পাঠাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কুষ্টিয়ায় চাঁদা না দেওয়ায় লুটপাট, মাইক্রোবাসে আগুন মিটফোর্ডের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচারে সরকার বদ্ধপরিকর: আইন উপদেষ্টা ঝুঁকি এড়াতে লামায় ৭৫ রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা আইসিসিতে শেখ হাসিনার বিচার চাইল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইসির প্রতীক তালিকায় নতুন ৪৬ চিহ্ন, বাদ শাপলা দুই বাণিজ্য সংগঠনে প্রশাসক নিয়োগ

[t4b-ticker]

বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধনের উপায়

Reporter Name / ৯৯ Time View
Update : রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০২:০৫ পূর্বাহ্ন
বন্যার সময় খাবার পানি পরিশোধনের উপায়

অতিবৃষ্টি ও দুর্যোগপ্রবণ মৌসুমগুলোতে বন্যা একটি স্বাভাবিক বিষয়। আর বাংলাদেশে প্রতি বছর এই দুর্যোগটি রীতিমত মহামারির আকার ধারণ করে। ঘরবাড়ি, কৃষিজমি, শিল্প-কারখানাসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগুলো পানি দূষণের শিকার হয়। বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান, জ্বালানি, ব্যাকটেরিয়ার মত দূষকগুলো বন্যার পানির সঙ্গে খুব বেশি পরিমাণে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থাগুলো কয়েক সপ্তাহ ধরে বন্যার দূষিত পানিতে সম্পূর্ণরূপে প্লাবিত হয়ে থাকে।

তাই এই সময়টিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় খাবার পানি পরিশোধিত করার বিষয়টি আবশ্যক হয়ে দাঁড়ায়।চলুন জেনে নেই খাবার পানির বিশুদ্ধকরণের নানা উপায় ।

পানি ফুটানো
পানি ফুটালে এতে থাকা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীসহ রোগ-সৃষ্টিকারী জীবাণু মরে যায়। এই পানি সিদ্ধ করার কাজটি বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে।

পানি ফুটতে শুরু করলে, প্রথমে একটি পরিষ্কার কাপড়, কাগজের তোয়ালে বা কফি ফিল্টার দিয়ে ছেকে নিতে হবে এবং ফুটন্ত পানিকে স্থির হতে দিতে হবে। এভাবে পাওয়া পরিষ্কার পানিকে এক মিনিটের জন্য আবার ফুটিয়ে নিতে হবে। ফুটন্ত বিশুদ্ধ পানি ঠান্ডা হওয়ার পর আঁটসাঁট কভারসহ পরিষ্কার স্যানিটাইজড পাত্রে তা সংরক্ষণ করতে হবে।

সিদ্ধ পানির স্বাদ ভালো করার জন্য এটি এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে ঢেলে কয়েক ঘণ্টার জন্য অপেক্ষা করা যেতে পারে। এছাড়া প্রতি লিটার সিদ্ধ পানিতে এক চিমটি লবণ যোগ করেও স্বাদ উন্নত করা যায়।

রাসায়নিক জীবাণুনাশক ব্যবহার
পানি ফুটানো সম্ভব না হলে রাসায়নিক জীবাণুনাশক যেমন গন্ধহীন ক্লোরিন ব্লিচ, আয়োডিন বা ক্লোরিন ডাই অক্সাইড ট্যাবলেট ব্যবহার করে অল্প পরিমাণ পানি পান করার জন্য নিরাপদ করতে পারেন। এগুলো বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায় এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে পানি চিকিৎসা করার জন্য তৈরি করা হয়ে থাকে।

জীবাণুনাশকগুলো বেশির ভাগ ক্ষতিকারক বা রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলতে পারে। কিন্তু ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম ও গিয়ার্ডিয়ার মতো আরও প্রতিরোধী জীবাণু মারার জন্য এই পদ্ধতি কার্যকর নয়। এর জন্য পানি ফুটাতে হবে।

তবে ক্লোরিন ডাই অক্সাইড ট্যাবলেটগুলো ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম ধ্বংস করতে পারে। কিন্তু এর জন্য ট্যাবলেটের লেবেল বা প্যাকেজে থাকা প্রস্তুতকারকের নির্দেশাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে।

পানিতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক বা তেজস্ক্রিয় উপাদান থাকলে সেখানে একটি জীবাণুনাশক যোগ করলেই তা পানযোগ্য হবে না। আয়োডিন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা পানি গর্ভবতী নারীদের, থাইরয়েড সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিদের বা আয়োডিনের প্রতি অতি সংবেদনশীলদের জন্য ক্ষতিকর। এটি ক্রমাগত ব্যবহারের করাও ঠিক নয়। একবারে সর্বোচ্চ কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করা যেতে পারে।

ব্লিচ ব্যবহার
ব্লিচের বিভিন্ন ঘনত্বের হয়ে থাকে। ব্লিচ দিয়ে পানি জীবাণুমুক্তকরণ পদ্ধতি শুরুর আগে এর ঘনত্ব জানতে হবে। আর এটি পাওয়া যাবে ব্লিচের লেবেলে। একেক দেশে ঘনত্ব একেক রকম হয়ে থাকে। বাংলাদেশে ব্লিচে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইটের ঘনত্ব ৫ থেকে ৬ শতাংশ।

ব্লিচ দিয়ে জল জীবাণুমুক্ত করার জন্য প্রথমেই পানি ফুটিয়ে পরিষ্কার পানি আলাদা করে নিতে হবে।

সাধারণত খাবার পানি জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশনা ব্লিচের লেবেলেই দেওয়া থাকে। তবে তা না থাকলে, লেবেলে উল্লেখিত ‘সক্রিয় উপাদান’থেকে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট শতাংশ নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। তারপর একদম অতি সামান্য পরিমাণে ব্লিচ চা-চামচে নিয়ে বিশুদ্ধ পানির প্রতি লিটারে যোগ করতে হবে। মিশ্রণটি ভালো করে নাড়াতে হবে। এরপর কমপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। জীবাণুমুক্ত পানি পরিষ্কার ও স্যানিটাইজড পাত্রে শক্ত কভারসহ সংরক্ষণ করতে হবে।

ফিল্টার-এর মাধ্যমে পরিশোধন
কিছু পোর্টেবল ওয়াটার ফিল্টার আছে, যা খাবার পানি থেকে রোগ সৃষ্টিকারী পরজীবী যেমন- ক্রিপ্টোস্পোরিডিয়াম ও গিয়ার্ডিয়া দূর করতে পারে।

অধিকাংশ পোর্টেবল ওয়াটার ফিল্টার ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া অপসারণ করে না। তাই ফিল্টার নির্বাচনে বেশ সাবধানী হতে হবে। অধিক প্রতিরোধী পরজীবীগুলোকে অপসারণ করার জন্য ফিল্টারের ছিদ্রের আকার যথেষ্ট ছোট হতে হবে। আকারে যা প্রায় এক মাইক্রন বা তার থেকে ছোট। পানি ফিল্টারের সময় এর লেবেলে থাকা প্রস্তুতকারকের নির্দেশাবলী সতর্কতার সঙ্গে পড়ে অনুসরণ করতে হবে।

ফিল্টার করার পরে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার ধ্বংস নিশ্চিত করতে ফিল্টার করা পানিতে আয়োডিন, ক্লোরিন বা ক্লোরিন ডাই অক্সাইডের মতো জীবাণুনাশক যোগ করা যেতে পারে।

পাতন প্রক্রিয়া
পাতন একটি পানি বিশোধন পদ্ধতি, যেখানে মূলত তাপ ব্যবহার করে বাষ্প আকারে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করা হয়। এই পদ্ধতিটির কার্যকারিতা বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত। পানিতে থাকা অন্যান্য দূষিত এবং রোগ সৃষ্টিকারী উপাদানের তুলনায় পানি অল্প তাপেই ফুটতে শুরু করে। স্ফুটনাঙ্কে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পানিতে তাপ দিতে হয়। তারপর এটি বাষ্পীভূত না হওয়া পর্যন্ত ফুটন্ত অবস্থায় রেখে দেওয়া হয়। এই বাষ্প ঠান্ডা করার জন্য একটি কনডেন্সার ব্যবহার করা হয়। শীতল হওয়ার পরে বাষ্প পরিষ্কার এবং নিরাপদ পানযোগ্য পানিতে পরিণত হয়। উচ্চতর স্ফুটনাঙ্কযুক্ত অন্যান্য পদার্থগুলো পাত্রে পলি হিসেবে রেখে দেওয়া হয়।

এই পদ্ধতি ব্যাকটেরিয়া, জীবাণু, লবণ এবং অন্যান্য ভারী ধাতু যেমন সীসা, পারদ এবং আর্সেনিক দূর করতে কার্যকর। পাতন কাঁচা ও অপরিশোধিত পানির জন্য আদর্শ পদ্ধতি। এই পদ্ধতির সুবিধা এবং অসুবিধা উভয়ই রয়েছে। একটি উল্লেখযোগ্য অসুবিধা হল এটি পানি বিশুদ্ধকরণের সব থেকে ধীর প্রক্রিয়া। উপরন্তু, এই পরিশোধন কাজটি করার জন্য একটি তাপীয় উৎস প্রয়োজন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের সস্তা তাপীয় উৎস তৈরি হলেও পাতনের মাধ্যমে পানি বিশুদ্ধ করা এখনো ব্যয়বহুল প্রক্রিয়াই রয়ে গেছে। এটি অল্প পরিমাণে পানি বিশুদ্ধ করার ক্ষেত্রে সাশ্রয়ী। বড় আকারের, বাণিজ্যিক বা শিল্প পর্যায়ে পানি পরিশোধনের জন্য এই পদ্ধতি আদর্শ নয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

More News Of This Category
Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031